সৃষ্টি কল্প
-সঞ্জিত মণ্ডল
পূবে যখন আঁধার এলো ছেয়ে, শুধাই তারে তুমিই কি সেই মেয়ে!
অবাক চোখে আমার দিকে চেয়ে লজ্জা রাঙা মুখটি তাহার নিয়ে,
শুধায় আমায় পথিক কোথায় যাবে, আমার কুটির ওই সে বনের ছায়ে।
ঘন বাদল আসলো আরো ধেয়ে ত্রস্তে বলি চলো আমায় নিয়ে।
তোমার কুটির সেই সে বনের ছায়ে সে বুঝি ওই কাজলা নদীর বাঁয়ে।
দুলিয়ে মাথা অবাক বলে মেয়ে, চেনো বুঝি গেছো অচিন গাঁয়ে।
খেলি মোরা অশোক তরুর গায়ে আরো কতই শিমূল বকুল ছায়ে।
সবাই সেথায় আছে পরম সুখে মোদের গরব কাজলা নদী নিয়ে।
ভাবতে বসি যখন সকল দিয়ে পড়শীরা সব আসে খবর নিয়ে।
যাবে তুমি আমার সঙ্গ নিয়ে যে পথ গেছে গাঁয়ের উপর দিয়ে।
এ পথ গেছে কোন সুদূরের পানে আকাশ যেথায় মেশে মাটির সনে।
চলো পথিক আর কোরো না দেরী আকাশে আজ বিজলি দেখি ভারী।
আমি বলি চলো সোনার মেয়ে চলো তোমার স্নিগ্ধ কুটির ছায়ে।
এমন সময় চমকে উঠি কি যে বিজলী হানে কালো মেঘের মাঝে।
আচমকা সেই বজ্রপতন শুনে ভয়ে আমায় বুকে জড়ায় মেয়ে।
অমন মধুর সুবাস যে তার দেহে আনমনা হই মাটির গন্ধ পেয়ে।
বলল আমায় দৌড়ে চলো ধেয়ে বৃষ্টি পড়ে সারা শরীর দিয়ে।
আনন্দে কি অধীর হয় সে মেয়ে হঠাৎ করে বৃষ্টি ধরে ছোট্ট আঁচল দিয়ে।
আমি বলি কি আশ্চর্য! কি হবে ও দিয়ে বৃষ্টি তুমি ধরবে বুঝি তোমার আঁচল দিয়ে?
খিলখিলিয়ে হাসলো যে সেই মেয়ে মুক্তো ঝরে তার সে হাসি দিয়ে।
চোখের কাজল কখন গেছে ধুয়ে ডাগর চোখে তাকালো সেই মেয়ে।
বলল আমায় নাচতে তুমি পারো এসো আমার হাতটি এমন ধরো।
তোমায় নিয়ে খেলবো এমন খেলা দেখবে দুলে উঠবে মনের দোলা।
প্রলয় নাচন নাচবো যখন দুয়ে দেখবে তখন ক’জন আছে চেয়ে।
পাতার কুটির কাজলা নদীর বাঁয়ে সৃষ্টি সুখে মাতবো সেথায় গিয়ে।
সাক্ষী থাকবে বনের হরিণ পাখি সাক্ষী থাকুক চাঁদ তারা আর নদী।
বৃষ্টি যদি যায় গো তখন থামি সৃষ্টি সুখের উল্লাসে গাই আমি।
ফুল-নদী-জল শুনবে সে গান মুগ্ধ চোখে চেয়ে
দেখবে তুমি নতুন সৃষ্টি আনবো সে গান গেয়ে।
জানো কবি আমিই বৃষ্টি মেয়ে কবে থেকেই চাইছি তোমায় বৃষ্টির গান গেয়ে।
এতোদিনের পর পেয়েছি ব্যাকুল মনটা নিয়ে
আকুল হিয়ার সৃষ্টি ধারা ঝরুক বৃষ্টি দিয়ে।।
খুব ভাল লাগল। অনেকবার পড়ার পর বুঝলাম কবির মনের তল পাওয়ার চেষ্টা বৃথা।
আমার আন্তরিক অভিনন্দন জানাই বন্ধু